ঢাকাবুধবার , ২৩ আগস্ট ২০২৩

এমটিএফই প্রতারণাঃ পটুয়াখালী জেলার দুমকীতে নিঃস্ব অ়ল্প বয়সী তরুণ ও যুবকেরা

Siam Hossen
আগস্ট ২৩, ২০২৩ ৮:৫৫ অপরাহ্ণ
Link Copied!
   
                       

পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ

একবুক স্বপ্ন নিয়ে রাতারাতি বড়লোক হওয়ার আশায় পটুয়াখালীর দুমকীতে একটি অনলাইনভিত্তিক বাণিজ্যিক এ্যাপে (এমটিএফই) লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন উপজেলার অল্প বয়সী তরুণ ও যুবকেরা। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি দিয়ে স্বপ্নের ওই এ্যাপটি সম্প্রতি বন্ধ হয়ে গেছে। আর ওই এ্যাপটির সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া আখলাকুর রহমান অন্তু’র বিরুদ্ধেও প্রতারণার অভিযোগ তুলেছেন তার বন্ধুরা।

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করলে নেটিজেনদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

সূত্র জানায়, উপজেলার আবুল কালাম নামের যুবক হারিয়েছেন ৬ লাখ টাকা, সরোয়ার হোসন হারিয়েছেন ৪ লাখ টাকা, গ্রামীণ ব্যাংক সড়কের রুবেল গাজী হারিয়েছেন ১লাখ ২০ হাজার টাকা, বশির হাওলাদার হারিয়েছেন ১লাখ ২০ হাজার টাকা, আল-আমিন হোসাইন হারিয়েছেন ১লাখ ২০ হাজার টাকা। এছাড়াও জানা গেছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রয়েছেন অনেকেই।

দুমকী উপজেলার বাসিন্দা আবুল কালাম নামের আরেক যুবক বলেন, ‘আমি অন্তু’র কাছে ওই অ্যাপের কথা শুনে লাখ টাকার ওপরে বিনিয়োগ করেছিলাম। কিছুদিন ভালোই লাভ পাইছি। কিন্তু হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর উল্টো বিনিয়োগ করা টাকা কমতে কমতে ব্যালান্স শুন্য হয়ে গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভুক্তভোগী জানান, প্রথমে অপারগতা প্রকাশ করলেও এক পর্যায়ে আমি রাজি হয়ে ব্যাংক থেকে ২লাখ টাকা লোন নেই। ভাগ্য ভালো অ্যাকাউন্ট ক্রিয়েট করে দেয়ার আগের দিন দিবাগত রাতে অ্যাপসটি লাপাত্তা হয়ে যায়।

এ বিষয়ে কোন আইনি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা যারা বন্ধু মহল ভুক্তভোগী আছি সবাই মিলে ডিসিশন নিয়ে অবশ্যই আইনের পদক্ষেপ নিব। তবে অন্ত যদি টাকাগুলো ফেরত দেয়; তাহলে আমরা এসব কোন ঝামেলায় যাব না।

আমি নিজেই ভিক্টীম উল্লেখ করে অভিযুক্ত এবিএম আকলাখুর রহমান অন্তু পায়রার কন্ঠকে বলেন বলেন, আমার ইউনিভার্সিটির এক বড় ভাই আমাকে লিংক দিয়ে কাজ করার জন্য বলেন। প্রথমদিকে বেশ লাভ দেখে আমার কয়েকজন বন্ধুকে উদ্বুদ্ধ করেছিলাম। কিন্তু কাউকে কোনো প্রলোভন দেখাইনি। সবাইকেই বলেছি এটা অনলাইন ভিত্তিক এ্যাপ, এতে রিস্ক আছে। তোমরা নিজেদের দায়িত্বে খুলতে পারো।

নিজেকে সিইও পরিচয় দিয়েছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওই এ্যাপে ২.৫ লাখ টাকার ওপরে বিনিয়োগকারীকে মূলত সিইও বলা হত। আমি নিজেই ১৭ লক্ষ টাকা বিনিয়োগকারী হিসেবে সিইও পরিচয় দিতাম।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে দুমকী থানার ওসি তদন্ত মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের কাছে এখনো কেউ কোনো অভিযোগ করে নি। কেউ যদি অভিযোগ করে তাহলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেহেতু আপনার মাধ্যমেই এ রকম ঘটনা প্রথম শুনলাম। আমরা বিষয়টি খোঁজখবর নিয়ে দেখছি।’

উল্লেখ্য, দুবাই ভিত্তিক মেটাভার্স ফরেন এক্সচেঞ্জ গ্রুপ ইনকর্পোরেশন যার সংক্ষিপ্ত নাম এমটিএফই। এটি আন্তর্জাতিক আর্থিক বাজারে ট্রেডিংয়ের সুযোগ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মাল্টি-লেভেল মার্কেটিং(এমএলএম) সিস্টেমে পরিচালিত হত। এ্যাপের কোন সদস্য অপর কাউকে অ্যাকাউন্ট খুলে সদস্য বানালে দেয়া হত কমিশন। এছাড়াও এ অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খোলার পর বিনোয়াগ করা টাকার ওপর নির্দিষ্ট পরিমাণ মুনাফা জমা হতো। ভারত ও বাংলাদেশসহ ২৬ টি দেশ থেকে এ এ্যাপটিতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক লোকজন বিনিয়োগ করেছিলেন ছিলেন।