ঢাকাশুক্রবার , ২০ অক্টোবর ২০২৩

শরিয়তপুরের তারাবুনিয়ায় জেলেদের চাল কম দেওয়ার অভিযোগ

আমির হামজা, শরিয়তপুর প্রতিনিধি:
অক্টোবর ২০, ২০২৩ ১২:১৪ অপরাহ্ণ
Link Copied!
   
                       

 

আমির হামজা, শরিয়তপুর প্রতিনিধি:

 

শরিয়তপুরের ভেদরগঞ্জে জেলেদের সহায়তার চাল ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। প্রত্যেক জেলেকে ২৫ কেজি চাল দেওয়ার কথা থাকলেও সেখানে ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে ২২-২৩ কেজি করে দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) সকালে উপজেলার উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) এ ঘটনা ঘটে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১১ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২ নভেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত ২২ দিন সারাদেশে মা ইলিশ ধরা, কেনাবেচা ও মজুত নিষিদ্ধ করে সরকার। এসময় বেকার জেলেদের মধ্যে ২৫ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। কর্মসূচির আওতায় উপজেলার উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের ইলিশ আহরণ থেকে বিরত থাকা এক হাজার ৬০০ জেলের জন্য ২৫ কেজি করে ৪০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। এদের মধ্যে চাল বিতরণের প্রথম দিন বুধবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ইউনিয়নের ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ৯৯৫ জন জেলেকে চাল বিতরণ করা হয়।

একাধিক ভুক্তভোগী জেলে জানায়, সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে চাল নেওয়ার অপেক্ষা করেন তারা। এরপর উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের একটি কক্ষ থেকে ট্যাগ অফিসার ও ইউনিয়ন সচিবের সামনে থেকে ওজন মাপার যন্ত্র ছাড়াই অনুমান করে লাল একটি লাল বালতি মেপে চাল দেওয়া হয়। সেখানে তাদের ২৫ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও পরবর্তীতে বাহিরের একটি দোকান থেকে ওজন দিলে সেখানে ২-৩ কেজি করে চাল কম পাওয়া যয়। এসময় কয়েকজন জেলে মেশিন দিয়ে চাল মেপে দেওয়ার আপত্তি জানালে ট্যাগ অফিসারের সামনে বালতি মাপা হলে সেখানেও ২৫ কেজি চাল হয়নি।

মুনসুর প্রধানীয়া নামের এক জেলে অভিযোগ করে বলেন, ভেতর থেকে আমাদের বালতি মেপে চাল দিয়েছে। সেখানে ২৫ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও বাহিরে এসে মেপে দেখি ২২ কেজি ৮০০ গ্রাম।

নুরুউদ্দিন ব্যাপারী নামের আরেক জেলে বলেন, চাল দেওয়ার পর দোকানে চাল মেপে দেখি আমাকে ২৫ কেজির জায়গায় ২৩ কেজি ৩৯২ গ্রাম দিয়েছে। এ মৌসুমে ইলিশ মাছ না ধরার জন্য সরকার থেকে সামান্য কিছু চাল পাই এ চাল থেকেও যদি আমাদের কম দেয় তাহলে কীভাবে চলবো বলেন। আমাদের সঠিক পরিমাণে চাল দেওয়ার দাবি জানাই।

এ বিষয়ে উত্তর তারাবুনিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ইউনুস আলী মোল্লা বলেন, অসুস্থ থাকায় ঢাকায় চিকিৎসা নিতে এসেছি। তবে ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে চাল বিতরণ করা হয়েছে। আমি সঠিক পরিমাণে চাল বিতরণ করতে বলেছি। কেউ যদি অনিয়ম করে চাল কম দেয় বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জানাবো।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ট্যাগ অফিসার) আনিসুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, আপনি চাল বিতরণের সময় দাঁড়িয়ে থেকে দেখবেন। তখন যদি আমাদের ভুল ত্রুটি থাকে আমরা সংশোধন করে দিবো। একজন জেলে বাহিরে গিয়ে চাল বিক্রি করে ওজন দেয় এটা আমাদের জানা আছে। এগুলো আমাদের কাছে বলে কোনো লাভ নেই। আমি দাঁড়িয়ে থেকে চাল বিতরণ করেছি সেখানে কোনো কম দেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে ভেদরগঞ্জ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ট্যাগ অফিসার থাকার পরেও সেখানে চাল কেন কমে দিবে এটা আমারও প্রশ্ন। সরকার থেকে চাল পরিবহনের খরচ পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। আমি বিষয়টি ইউএনওকে জানাবো।

এ ব্যাপারে ভেদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কোনো জেলেকে যদি চাল কম দিয়ে থাকে সেক্ষেত্রে ভুক্তভোগী জেলেকে আমাদের কাছে অভিযোগ দিতে বলেন। আমি পদক্ষেপ নেবো।