ঢাকাশুক্রবার , ৩ নভেম্বর ২০২৩

ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ, প্রস্তুত জেলেরা

Siam Hossen
নভেম্বর ৩, ২০২৩ ৫:২৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!
   
                       

মোঃ ছিদ্দিক ভোলা প্রতিনিধি

প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় শেষ হচ্ছে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। ১১ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২ নভেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত ২২ দিনের এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) মধ্য রাত থেকে ইলিশ আহরণে নদীতে নামছে জেলেরা। এরই মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন জেলেরা। ভোলা সদরের ইলিশা নদী থেকে মনপুরার চর পিয়াল পর্যন্ত ৯০ কিলোমিটার এবং ভোলার ভেদুরিয়া থেকে চর রুস্তম পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটারসহ মেঘনা ও তেঁতুলিয়ার ১৯০ কিলোমিটার ইলিশ অভয়াশ্রম এলাকায় মা ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার। এই নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার রাত ১২টায়। ভোলায় প্রায় ১ লাখ ৫৭ হাজার জেলে মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় মাছ আহরণ করতে নামবেন।

তবে মা ইলিশ রক্ষায় সরকার যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে তা বাস্তবায়ন করার জন্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ কঠোর নজরদারি ও প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল বলে জানায় জেলা মৎস্য অফিস । ভোলার মেঘনা উপকূলীয় এলাকার অধিকাংশ মানুষই ইলিশ আহরণের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এদের মধ্যে এক শ্রেণির অসাধু জেলে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল দিয়ে মা ইলিশ আহরণ করার প্রচেষ্টা চালায়। আইন অমান্য করে ইলিশ ধরায় প্রশাসনের হাতে আটক হয়ে জরিমানাসহ বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ভোগ করতে হচ্ছে জেলেদের। পাশাপাশি অভিযানে জব্দকৃত প্রায় অর্ধ কোটি টাকার জাল পুড়িয়ে দিয়েছে মৎস্য কর্মকর্তারা।

এদিকে ২২ দিন কর্মহীন থাকার পর নৌকা ও জাল মেরামত করে প্রস্তুতি নিয়েছে জেলেরা।

সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জাল ও নৌকা নিয়ে নদীতে মাছ আহরণের জন্য অপেক্ষা করছেন জেলেরা।

 

এদিকে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, মোট ৭ উপজেলায় ২২ দিনের অভিযানের সংখ্যা ৬৩১, মোবাইল কোর্টের সংখ্যা ১৬৬, জেলে আটককৃত ৪৬৯ জন, এর মধ্যে ২০৬ জনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আটককৃত ট্রলার ২৩টি ও নৌকা ৪৩টি। মামলা সংখ্যা ১৪৯টি। এ ছাড়া জব্দকৃত জাল ১৯ হাজার ৯১৯ লাখ মিটার, যার মূল্য ৩ কোটি ৮৪ লাখ ৩৯ হাজার টাকা।

ইলিশা নৌ থানার ওসি মো. আখতার হোসেন বলেন, আমাদের লোকবল কম থাকায় ১৯০ কিলোমিটারের বিশাল এলাকা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। তবে মা ইলিশ প্রজনন সময়ে অভিযানের শুরু থেকে আমরা দিন ও রাতে অভিযান পরিচালনা করেছি। তবে অনেকাংশে সফলতা লাভ করেছি। আমাদের লোকবল বাড়ানো হলে ভবিষ্যতে আরও সফলতা লাভ করব।

দৌলতখান ও ভোলা সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহাফুজুল হাসনাইন বলেন, আমরা এ বছরে মেঘনাতে সব ধরনের জাল মুক্ত রাখতে দিনে রাতে অভিযান পরিচালনা করেছি। আশা করছি এ বছর মাছের উৎপাদন বেশি হবে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, জাতীয় সম্পদ ইলিশ। মা ইলিশ রক্ষা করাই আমাদের সফলতা। নিষেধাজ্ঞা সময়ে নির্বিঘ্নে বাধাহীনভাবে মা ইলিশ ডিম ছাড়তে পারে এ ব্যাপারে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। জেলেদের সচেতন করতে বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট বিতরণসহ সভা, সমাবেশ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবারে প্রজনন উৎপাদন বেশি হবে বলে আশা করি। এ ছাড়া সবার সহযোগিতায় সফলভাবে অভিযান সম্পন্ন করেছি। আগামীতে আমরা লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হব। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার পর থেকে জেলেরা নদীতে নির্বিঘ্নে মাছ শিকার করতে পারবে।