ঢাকাবুধবার , ৮ মার্চ ২০২৩

মহাস্থানে অগ্নিকাণ্ডে নিঃস্ব বৃদ্ধা নূরবানু, ২ নাতী আর বিধবা পুত্রবধূকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন

নুর ইসলাম জনিঃ
মার্চ ৮, ২০২৩ ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!
   
                       

নুর ইসলাম জনিঃ শিবগঞ্জ বগুড়া থেকেঃ
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার গড়মহাস্থান সরকার পাড়ার বৃদ্ধা নূরবানু (৭০) এর আকষ্মিক এক অগ্নিকাণ্ডে সবকিছুই হারিয়ে যেন এখন সে নিঃস্ব। সোমবার দিবাগত রাতে সর্বনাশা আগুনে তার বেঁচে থাকার সব স্বপ্ন আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গড়মহাস্থান সরকার পাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল করিম আকন্দের মৃত্যুর ৪ বছর পর ১ মাত্র পুত্র নজরুল ইসলাম কে নিয়ে নতুন করে সংসারে হাল ধরতে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখেছিলেন বৃদ্ধা মা নূরবানু। কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস নূরবানুর স্বামীর মৃত্যুর ৪ বছর পর যাকে নিয়ে বেঁচে থাকবেন সেই এক মাত্র ছেলেরও মৃত্যু হয়।
নুরবানুর সংসারে যোগ হয় নাতী রাহিম (৯) নাতনী রত্না (১৪) ও পুত্রবধূ ফেরদৌসী (৩০)। নুরবানুর ২ নাতী মহাস্থান উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেন। নুরবানুর দুর্বিষহ সংসারে নেই কোন প্রধান উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। পুত্রবধূ ফেরদৌসী ও নুরবানু অন্যের কাজ করলেই তবে জোটে খাবার। বাড়ি-ঘর বলছে স্বামীর রেখে যাওয়া ৩ টি দেয়াল ঘর। তারপরও মানবেতর জীবন নিয়ে ভালোই যাচ্ছিল নূরবানুর নাতি-নাতনি ও বিধবা পুত্রবধূ কে নিয়ে দুঃখে সংসার। হতদরিদ্র নুরবানুর শেষ সম্বল মাথা গোঁজার ঠাঁই সোমবার দিবাগত রাত ১০টায় হঠাৎ অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে যখন আগুন প্রজ্জ্বলন হয়ে ধাপে ধাপে অন্য ঘরে প্রবেশ করছিল তখনও নুরবানুর পরিবারের সবাই ঘুমে বিভোর৷ একপর্যায়ে এলাকাবাসী যখন আগুনের লেলিহান শিখা দেখে চিৎকার করেন তখন সবাই ঘর থেকে দৌড়ে বের হয়ে প্রাণে বেঁচে যায়। এরপর স্থানীয়দের সহায়তায় শিবগঞ্জ ফয়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তারা এসে ঘন্টা ব্যাপী প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে নূরবানুর সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। বর্তমান পরিবারটি খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে।

কান্না জড়িত কণ্ঠে নূরবানু বলেন, “আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে বাবা” “স্বামী সন্তান হারিয়ে কাজকম করে খাই” হামার এই সব্বোনাস কেনো হলো” “এখন হামি নাতি করোক নিয়ে কুন্টি থাকমু” প্রতিবেশীরা বলেন, বৃদ্ধা নুরবানু স্বামী ছেলে কে হারিয়ে আমাদের এখানে সবচেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে। খুব অভাবে দিন কাটছে তাদের। তারই ভিতর আগুনে ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই খুবই দুঃখজনক বিষয়। তাদের পড়ের কাপড়চোপড় পর্যন্ত নেই। এলাকাবাসী সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করে বলেন, দ্রুত সরকারি সহযোগিতায় অসহায় এ পরিবারটিকে মাথা গোঁজার ব্যবস্থা না করলে তাদের খোলা আকাশের নিচে থাকতে হবে। তাই তারা শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উন্মে কুলসুম সম্পা ও জনপ্রতিনিধিদের দ্রুত সহায়তা কামনা করেছেন।