ঢাকাশনিবার , ৩ ডিসেম্বর ২০২২

নওগাঁয় আমন ধানওগাঁয় আমন ধানের বাম্পার ফলন হলেও ধানের দাম না থাকায় কৃষকের মাথায় হাত”” দেখার কেউ নেই”

উজ্জ্বল কুমার সরকার
ডিসেম্বর ৩, ২০২২ ৮:৫৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!
                       

উজ্জ্বল কুমার সরকার- নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ

নওগাঁ খাদ্য ভান্ডার খ্যাত, আম ও ধান চাষের জন্যে বিখ্যাত এই নওগাঁ জেলা। ১১টি উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলনসহ চলতি মৌসুমে হাটে-বাজারে আমন ধানের স্বরনা ৫ ধান ১১২০-১১৪০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে, কিন্তু এবারে কৃষকের সার -বিষ সেচের ডিজেল তেলে দাম দফায় দাফায় বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়েগেছে।তাই কৃষকের মুখে সামান্য সোনালী হাঁসির ঝিলিক দেখা যাচ্ছে । কিন্তূ সামনে সামনে সার কিটনাষক ঔষধের হালখাতার চাপ শুরু হতে যাচ্ছে, আবার নবান্ন উৎসবের আমেজে মেতে উঠেছে এলাকার কিষান-কিষানীরা। নতুন ধানের চালের আটায় তৈরী রকমারি পিঠা বানানোর ধুম পড়েছে কৃষাণীদের উনুনে উনুনে। মৌসুমের শুরুতে খোলা বাজারে খুচরা ব্যাবসায়ীরা সরকার নির্ধারিত মুল্য চেয়ে ৩শ থেকে ৪ শ”টাকা বেশি দামে প্রতিটি সারের বস্তা বিক্রি করেছে।
ওই সময় সারের মুল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি একটি স্বার্থন্বেশী মহল সার সংকটের গুজব ছড়িয়ে আমন ধান চাষিদের মধ্যে আতংক সৃষ্টির পায়তারা করে। তবে ওই সময় উপজেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অবৈধ ভাবে সার মজুদদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে করে। ফলে সারের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিকারীদের অসৎ উদ্দেশ্য ব্যার্থ হয়। উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য মতে চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় ২৭ হাজার ৯ শ” হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। সুত্রমতে লক্ষমাত্রার অতিরিক্ত দেড় হাজার হেক্টর জমিতে এবার আমন ধান চাষ করেছে কৃষকরা।
উপজেলার হাতুড় ইউনিয়নের হাতুড় গ্রামের কৃষক আমির হামজা, খাজুর ইউনিয়নের ল²ণপুর গ্রামের কৃষক শ্রীচরন মন্ডল, উত্তরগ্রাম ইউনিয়নের শিবরামপুর গ্রামের কৃষক আব্দুল জব্বার, সুলতানপুর গ্রামের কৃষক, দেলোয়ার সরদার ও স্বপন সরদার ৯ নাম্বার চেরাগপুর ইউনিয়নে চৌমাশিয়া সরকার পাড়া গ্রামের কৃষক সুকুমার সরকার বিদ্যুৎ চন্দ্রসহ নৃগোষ্ঠী আদিবাসী সুব্রত পাহান ভোদন পাহান শৈলেন পাহান সুদুয়া পাহান নরেন- রবিন পাহান এবং শ্রীমল পাহান সহ বেশ কিছু কৃষক জানান, সারের মুল্য বৃদ্ধি ও কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিসহ মৌসুমের মাঝ পথে কারেন্ট পোকার আক্রমণে আমন চাষিরা আতংকিত হয়ে পড়ে। চেরাগপুর ইউনিয়নের কৃষিঅফিসার মোঃ গোলাম রব্বানী মাটপর্যায়ে কৃষকের কাছে না গিয়ে নাকে সরিষা তৈলদিয়ে দূরথেকর মনিটরিং করে থাকেন বলে বেশ কিছু কৃষকের অভিযোগ রয়েছে। তবে বর্তমান ধানের উৎপাদন এবং হাট বাজারে আশানুরুপ ধানের মুল্য কম হলেও তারা খুশি। চলতি মৌসুমে আমন ধান চাষে কৃষি অধিদপ্তর থেকে প্রণোদনা হিসেবে প্রান্তিক কৃষকদের মধ্যে বিনামুল্যে সার বীজসহ বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করা হয়। ফলে সকল প্রতিক‚লতার অবসান ঘটিয়ে উপজেলার কৃষক তাদের উৎপাদনকৃত সোনালী ফসল আমন ধান কাটা ও মাড়াই শুরু করেছে। মৌসুমের শুরু থেকে প্রায় শেষ পর্যন্ত সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে আমন ধান চাষে কৃষকরা অনেকাংশেই সফল হয়েছে। উপজেলার ১০ ইউনিয়নে পুরো দমে উৎসবমুখোর পরিবেশে আমন ধানকাটা ও মাড়াই কাজে ব্যাস্ত সময় পাড় করছে কৃষকরা। গ্রামবাংলার ঐতিহ্য নবান্ন উৎসবের আমেজ বইছে উপজেলার প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে। নতুন ধান ঘরে উঠে আসার সঙ্গে সঙ্গে গ্রাম বাংলার পল্লী গৃহবধুদের মধ্যে রকমারি পিঠা বানানোর ধুম পড়ে গেছে।
এখন গ্রাম অঞ্চলের পরিবার গুলোর শিশু থেকে বৃদ্ধ এবং বৃদ্ধারা ঋতুরাজ হেমন্তের সকালে নতুন ধানের চালের আটায় তৈরী গরম গরম ধুপিপিঠার সাদ ও চোখে মুখে ভাপ নিতে আধির আগ্রহে বসে থাকছে উনুনের পাশে। চলতি আমন মৌসুমে বাম্পার ফলনের হয়েছে দাবী করে উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মোমরেজ আলী জানান, এ মৌসুমে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ২৭ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও এর অতিরিক্ত জমিতে কৃষকরা আমন ধান চাষ করছে।