শিবগঞ্জ স্টাফ রিপোটার :
বগুড়ার শিবগঞ্জে রাস্তার বাঁশের খুঁটি অপসারণকে কেন্দ্র করে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুঞ্জুরুল আলম ফকিরকে শাসালেন উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ রিজু। রাস্তার কাজ বন্ধ, এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এলজিডি’র বাস্তবায়নে উপজেলার কিচক ইউনিয়নের চিলইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংযোগ সড়কের ৩৩৫ মিটার ৮ফিট প্রসস্থকরণ কাজ কিছুদিন পূর্বে শুরু হয়। কাজটি পান মিজান কনস্ট্রাকশন নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। গত কয়েক দিন পূর্বে কিচক ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুঞ্জুরুল আলম ফকির ঐ রাস্তার পার্শ্বে ড্রেন নির্মাণের জায়গা রাখার বাঁশের খুঁটি দিয়ে ঘিরে রাখে। এতে করে রাস্তার কাজ করতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন জানালে গত সোমবার বিকালে উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা প্রকৌশলী সিহাদুল ইসলাম, কিচক ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান এবিএম শাহাজহান চৌধুরী ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গেলে বাঁশের ঐ খুঁটি দেখে উপজেলা চেয়ারম্যান তা অপসারণ করেন। এতে সাবেক চেয়ারম্যান সহ তার লোকজন প্রতিবাদ করলে উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডতা সৃষ্টি হয়।
চিলইল গ্রামের মিজানুর রহমান বলেন, রাস্তার প্রয়োজন রয়েছে কিন্তু রাস্তাটির কাজ উচুঁ করে করার কারণে রাস্তার পার্শ্বের অধিকাংশ বাড়ি নিচু হয়েছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তবে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা থাকলে এ রকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না।
সাবেক চেয়ারম্যান এর স্ত্রী কোহিনুর বেগম বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রকৌশলী আমার স্বামীকে বেঁধে নিয়ে যাওয়ার ভয়-ভীতি ও হুমকি ধামকি প্রদান করেছে। আমাদের জায়গায় আমার স্বামী বাঁশের খুঁটি দিয়েছে। একজন জন প্রতিনিধি হিসাবে উপজেলা চেয়ারম্যান আমার স্বামীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিতে পারেন না।
গৃহবধূ আলভি বেগম বলেন, রাস্তার কাজ হচ্ছে এটা আমাদের জন্য আনন্দের। কিন্তু উপজেলা প্রশাসনের লোকজন এসে বিনা কারণে আমাদের বসত বাড়ির কাঁথী কোদল দিয়ে কেটে ফেলেছে। রাস্তাটি এমন করে কাজ শেষ করলে একটু বৃষ্টিতেই বাড়ির মধ্যে পানি জমে থাকবে।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুঞ্জুরুল আলম ফকির বলেন, আমার আংশিক জমির উপর দিয়ে অবৈধ ভাবে আমাকে না জানিয়ে রাস্তার কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। রাস্তার পাশ দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না করেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাস্তার কাজ করায় আমি বাঁশের খুঁটি দিয়ে আমার সীমানা নির্ধারণ করেছি। তবে উপজেলা চেয়ারম্যান আমাকে না জানিয়ে বাঁশের খুঁটি অপসারণ করেন এবং আমার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং শাসিয়ে যান।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী সিহাদুল ইসলাম বলেন, ৩৩৫ মিটার সংযোগ সড়কটি ৮ ফিট চওড়া, ১২ ও ১৩ ফিট রাস্তা সরকারি ম্যাপে নক্সা রয়েছে। সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কোন কিছু না বুঝেই বাঁশের খুঁটি দিয়ে রাস্তার কাজে বাঁধা সৃষ্টি করেছেন।
উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ রিজু বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুরুল আলম ফকির হঠাৎ করে রাস্তার মাঝে বাঁশের খুঁটি দ্বারা ঘিরে নিয়েছে। রাস্তাটি সরকারি ও জন সাধারণের দীর্ঘদিনের যাতায়াতের রাস্তা। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বেই চিলইল প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রের সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করা হবে। সাবেক চেয়ারম্যান গায়ের জোরে রাস্তায় বাঁশের খুঁটি দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করেন। শাসানোর বিষয়টি স্বীকার করে তিনি আরও বলেন, সে আমার নিকটতম আত্মীয় হওয়ায় ভুল বুঝাবুঝির সৃষ্টি হয়।