ঢাকাশুক্রবার , ৩০ ডিসেম্বর ২০২২

গাংনীতে অর্থ ও স্বর্ণালংকার নিয়ে উধাও ২ সন্তানের জননী

মাজিদ আল মামুন
ডিসেম্বর ৩০, ২০২২ ৬:৫০ অপরাহ্ণ
Link Copied!
   
                       

মাজিদ আল মামুন-নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
মেহেরপুর এর গাংনীতে অসুস্থ দাদী কে দেখতে যাওয়ার কথা বলে স্বামীর বাড়ির নগদ ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার সহ মোট ৪ লক্ষাধিক টাকার মালামাল নিয়ে উধাও হয়েছেন আদরী খাতুন (২৮) নাম এর ২ সন্তান এর জননী।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর), এ বিষয়ে তদন্ত পূর্বক আদরীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এর জন্য গাংনী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী স্বামী গাংনী উপজেলার মাইলমারী গ্রাম এর ওমর আলীর ছেলে আমানুল্লাহ (৩৮)। জানা যায়, আমানুল্লাহ প্রায় ৯ বছর পূর্বে পারিবারিক ভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন গাংনী উপজেলার রায়পুর গ্রাম এর মৃত সোয়ব আলীর মেয়ে আদরী খাতুন এর সাথে। সুখের সংসার আলোকিত করে জন্ম গ্রহণ করেন ফুটফুটে জান্নাতী খাতুন (৭) ও রুকায়া খাতুন (৪) কিন্তু সে সুখ আর ভালো লাগেনি আদরী খাতুনের। অবশেষে সুখের সংসারে দুঃখের আগুন জ্বালিয়ে অসুস্থ দাদী কে দেখতে যাওয়ার কথা বলে স্বামী আমানুল্লাহ’র বাড়ি থেকে নগদ ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ২ টি স্বর্ণের চেইন, ২ জোড়া কানের দুল, সংসারে ব্যবহৃত মালামাল (সর্বমোট আনুমানিক মূল্য ৪ লক্ষাধিক টাকা) ও ২ মেয়ে কে নিয়ে উধাও হয়েছেন আদরী খাতুন।
গত ২২ ডিসেম্বর সকাল ৯ টার দিকে বাড়ি থেকে বেরোনোর পর সময় মতো ফিরে না আসায় শশুর বাড়িসহ আত্মীয়-স্বজনদের কাছে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে আদরী খাতুন এর কোন খোঁজ-খবর পাওয়া যায় নি। তার ব্যবহৃত দু’টি ফোন নাম্বার ০১৯২৫….২৭ ও ০১৭৬….০৩ নাম্বারও বন্ধ পাওয়া যায়। সমাজে মাণ ইজ্জত এর ভয়ে কাউ কে না জানিয়েই কয়েকদিন অতিবাহিত হয়। পরিশেষে বাড়ির লোকজন ও আত্মীয়-স্বজন এর পরামর্শে স্ত্রী আদরী খাতুন ও ২ মেয়ে কে খুঁজে পেতে এবং নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার ফিরে পেতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গাংনী থানার শরণাপন্ন হন ভুক্তভোগী আমানুল্লাহ। পরিবার এর সদস্যরা ধারণা করছেন, কারো সাথে পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে নগদ টাকা ও স্বর্নালংকার নিয়ে পালিয়ে যেতে পারে। তবে কার সাথে গেছে তা নিশ্চিত নন। আমানুল্লাহ’র ভাই ওবায়দুল্লাহ জানান, মাণ সম্মান এর কথা চিন্তা করে কাউ কে কিছু না জানালেও মেয়ে দু’টোর কি অবস্থা, কেমন আছে, কোথায় আছে তা জানা দরকার। তিনি জানান, ইতিমধ্যেই ঘটনা টি নিয়ে এলাকায় দারুন ভাবে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হওয়ায় প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ তাদের বাড়িতে ভীড় জমাচ্ছে। ঘটনাটি খুবই লজ্জাজনক। তিনি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এর জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
ওবায়দুল্লাহ’র স্ত্রী শাপলা জানান, গত ২ বছর ধরে আদরী আপা মাঝে মধ্যে ফোনে কথা বলতো। তবে গত ৫/৬ মাস ধরে ফোনে কথা বেশি বলতে শুরু করে। তবে কার সাথে বলতো তা অজানা। আমরা কেউ ধারণা করতে পারিনি উনি এমন ভাবে পরকীয়া করে স্বামী সংসার ছেড়ে পালিয়ে যাবেন। তিনি গেলেন বটে কিন্তু মাণ ইজ্জত সব বিলিয়ে গেলেন। শাপলা জানান, তিনি যাওয়ার পূর্বে বাড়ি বানানোর জন্য ঘরে রাখা ইট কেনার নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে যায়। প্রতিবেশীরা জানান, সম্প্রতি দু’মেয়ে কে পাড়ার অন্যান্য বাচ্চাদ এর সাথে খেলাধূলাতে পাঠিয়ে গাংনী উপজেলা শহর এ চিকিৎসা সেবা গ্রহণ এর জন্য গিয়েছিলেন। তাছাড়া হঠাৎ করে তার পরিবর্তন সন্দেহ জনক। ইতিপূর্বে গ্রাম এর মেয়েদের মতো থাকলেও বেশ কিছু দিন ধরে সাজুগুজু হয়ে থাকতে দেখা গেছে। হতে পারে কারও সাথে সম্পর্কে জড়ানোর পর এ পরিবর্তন। ভুক্তভোগী আমানুল্লাহ জানান, আমাকে না জানিয়ে সে এভাবে চলে যাবে ভাবতে পারিনি। তাছাড়া আমাকে রীতিমতো নিঃস্ব করে গেছে। তিনি এর সুষ্ঠু বিচার এর দাবী জানান। গাংনী থানার তদন্ত কর্মকর্তা মনোজিৎ কুমার নন্দী জানান, আমি গত ২ দিন ধরে কাথুলী ইউনিয়ন এর নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। তিনি এ বিষয়ে অবগত নন বলে জানান।