সাইমন হোসেন, ঠাকুরগাঁও
ঠাকুরগাঁওয়ে করোনার টিকা নেওয়ার পর থেকেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে ৫ বছরের কম বয়সী শিশু আফসানা মিম। তবে পরিবারের অভিযোগ প্রথম ডোজ টিকা না নিয়েই এবং পরিবারের কাউকে না জানিয়ে পাঁচ বছরের কম বয়সী ওই শিশুকে টিকা দেয় স্বাস্থ্যকর্মীরা। গত রোববার (৯ জানুয়ারি) সদর উপজেলার বোচাপুকুর ইক্ষুখামার সরকারি বিদ্যালয়ে সকাল ১১ টায় শিশুটির পরিবারকে না জানিয়ে সনদপত্র ছাড়াই তাকে করোনা টিকা দেন দায়িত্বরত স্বাস্থ্যকর্মীরা। আর টিকা দেয়ার পরেই শিশুটি অসুস্থ হয়ে গেলে পরিবারের স্বজনরা তাকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। জানা যায় মিম বোচাপুকুর এলাকার আবিদ আলীর মেয়ে।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, করোনার টিকা নেওয়ার পর থেকেই মিম অসুস্থ বোধ করে এবং মিম তার পরিবারের লোকদের বিষয়টি অবগত করলে তারা তাকে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে দুদিন চিকিৎসা নিলেও শিশুটি খাওয়া দাওয়া ও কথা বলা বন্ধ করে দেয় এবং শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠায় ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিকে অসুস্থ শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটাছুটি করছে গরিব অসহায় পরিবারের সদস্যরা। শিশুর এমন অবস্থা দেখে উপায় না পেয়ে ঋণ নিয়ে মাইক্রো ভাড়া করে সন্তানকে বাঁচাতে রংপুরে ছুটে যান তারা। শিশটির বাবা আবিদ আলী অভিযোগ করে বলেন, তার মেয়ে করোনার প্রথম ডোজ টিকা না নেয়ার পরেও তাকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়া হয়েছে। টিকা দেয়ার আগে অভিভাবকের সঙ্গে কেউ যোগাযোগও করেনি। পরে শিশুটির কাছেই জানতে পারেন যে তাকে করোনা টিকা দেয়া হয়েছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা বলেন, সোমবার সকাল ১১টার দিকে স্কুলের সকল শিক্ষার্থীকে টিকা দেয়া হয়। টিকা নিয়ে সবাই বাড়ি চলে যায়। বিকেলের দিকে মিমের পরিবারের লোকজন আমাকে জানায় যে, মিম অসুস্থ। এসময় তিনি তাকে দেখতে যান এবং তার মা-বাবাকে সঙ্গে নিয়ে শিশুটিকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করান। পরে শিশুটির অবস্থা অবনতি হলে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের ব্যবস্থা করেন। ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে সিভিল সার্জন ডা. নূর নেওয়াজ আহমেদ বলেন, ঘটনাটি জানার পর ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কোনো ধরনের অনিয়মের প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।