ঢাকারবিবার , ১৪ জুলাই ২০২৪

ইউএনও অফিসের হিসাব সহকারীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ

দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ
জুলাই ১৪, ২০২৪ ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!
   
                       

উপজেলা প্রতিনিধি :

রাজশাহী জেলার পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের হিসাব সহকারি মো: মামুনুর রশীদ এর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগ উঠেছে। পুঠিয়া উপজেলায় গ্রাম পুলিশের সংখ্যা ৫৯ জন। প্রতিমাসে ১২শত টাকা হিসাবে তারা সম্মানি ভাতা পেয়ে থাকেন। সম্মানি ভাতার অর্থ উপজেলা প্রকৌশলী মো পারভেজ নেওয়াজ খান ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ,কে,এম, নূর হোসেন নির্ঝর এর যৌথ স্বাক্ষরে উত্তোলন করা হয়। চেকটি ইসু করা হয় মো: মামুনুর রশীদ UNO অফিস এর নামে।

গত (০৬ জুলাই) ৫৯ গ্রাম পুলিশকে এক মাসের হাজিরা বাবদ ১২শত টাকা হারে মোট ৭০ হাজার ৮শত টাকা প্রদান করা হয়। কিন্তু সোনালী ব্যাংক লিমিটেড পুঠিয়া শাখা রাজশাহীর যার চলতি হিসাব নং ১০০৯৩৯৮ হতে গত ০৬ জুলাই তারিখে ৬১৯০৩৯২ নম্বর চেকের মাধ্যমে ৮৮ হাজার ৫ শত টাকা উত্তোলন করা হয়। উত্তোলনকৃত অর্থ হতে ৭০ হাজার ৮ শত টাকা গ্রাম পুলিশদের হাজিরা বাবদ প্রদান করা হয়। অবশিষ্ট ১৭ হাজার ৭ শত টাকা পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের হিসাব সহকারি মো মামুনুর রশীদ আত্মসাৎ করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে জিউপাড়াপাড়া ইউনিয়ন গ্রাম পুলিশ মানিক হোসেন ও পুঠিয়া ইউনিয়নের দফাদার তৈয়ব আলী জানান, উপজেলার সকল গ্রাম পুলিশ এর সম্মানী ভাতা বাবদ আমরা ৭০হাজার ৮শত টাকা পেয়েছি। অবশিষ্ট ১৭ হাজার ৭শত টাকার বিষয়টি হিসাব সহকারি মামুনুর রশীদ বলতে পারবেন।

তবে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে আরো কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুইজন সাংবাদিক জানান, জাতীয় একটি পত্রিকার বিজ্ঞাপন বিল ও একটি ইংরেজি পত্রিকার বিল বাবদ টাকা প্রদান করলেও সরকারি ভ্যাট+ট্যাক্স কর্তন করা হয়নি। বিলের চেক প্রদানের পর ভ্যাট+আইটি বাবদ সাড়ে ১৭ পার্সেন্ট নগদ অর্থ দাবি করে হিসাব সহকারি মো মামুনুর রশীদ। হিসাব সহকারীর দাবিকৃত টাকা উক্ত দুই সাংবাদিক নগদ পরিশোধ করে বিজ্ঞাপন বিলের চেক গ্রহন করেন। এবার দুই সাংবাদিক ভ্যাট ও আইটি চালানের কপি চাইলে পরবর্তী কার্য দিবসে দেবেন বলে হিসাব সহকারি তাদের দিনের পর দিন ঘুরাতে থাকে। এমতাবস্থায় সাংবাদিকরা উপজেলা প্রকৌশলী পারভেজ নেওয়ার খান এর কাছে মৌখিক অভিযোগ করেন। এরপর হিসাব সহকারি প্রকৌশলীর রুমে এসে সাংবাদিকদের বিজ্ঞাপন বাবদ প্রদানকৃত টাকা হতে ভুলক্রমে ভ্যাট আইটি কর্তন করা হয়নি বলে জানান এবং তিনি ভুল স্বীকার করে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। নাগরিক সেবা পেতে হয়রানির বিষয়টি দুঃখজনক বলে উক্ত দুই সাংবাদিক মন্তব্য করেন।

উল্লেখ্য যে, বিজ্ঞাপনের বিল বাবদ সরকারি পাওনা ভ্যাট+আইটি কর্তন না করায় সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে যা উক্ত কর্মচারীর কর্তব্যকর্মে অবহেলার শামিল ও সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধির পরিপন্থী। সকল অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের হিসাব সহকারী মো: মামুনুর রশিদ জানায়, গ্রাম পুলিশের সম্মানী ভাতার টাকা উত্তোলন করে তাদের মধ্যে বন্টন করে দিয়েছি। অতিরিক্ত কোন টাকা উত্তোলন করা হয়নি। ইউএনও এবং উপজেলা প্রকৌশলী সাক্ষর এ আমি টাকা উত্তোলন করেছি। আপনার যদি কিছু বলার থাকে ইউএনও স্যারকে বলুন। এ বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা প্রকৌশলী পারভেজ নেওয়াজ খান এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ইউএনও অফিসের হিসাব সহকারী এগুলো দেখে থাকেন বলে তিনি জানান। সে কোন অনিয়ম করে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ, কে, এম, নূর হোসেন নির্ঝর জানান, এ বিষয়ে তিনি অবগত নন। তবে যদি এমন হয়ে থাকে তাহলে সেটা মারাত্মক অপরাধ। বিষয়টি তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।