
উজ্জ্বল কুমার সরকার নওগাঁ থেকেঃ
ব্যতিক্রমী উৎপাদন-নওগাঁয় বেগুন গাছে টমেটো চাষ। জংলি বেগুন গাছের সাথে গ্র্যাফটিং পদ্ধতিতে হাইব্রিড জাতের গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে সফল হয়েছেন কৃষক জহুরুল ইসলাম বাদল। কৃষক জহুরুল ইসলাম বাদলের বাড়ি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার শিয়ালা গ্রামে। তিনি নিজস্ব জমিতে ফসল উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করেন। জমিতে নতুন নতুন জাতের এবং অধিক উৎপাদনশীল ফসল উৎপাদন তার নেশা। সাধারণ যে কোন ফসলকে ব্যতিক্রমী উপায়ে উৎপাদন করে অধিক লাভবান হওয়ার উপায় খুজে বের করেন কৃষক জহুরুল ইসলাম বাদল।
এ বছর তিনি জংলি বেগুন গাছের সাথে গ্র্যাফটিং পদ্ধতিতে হাইব্রিড জাতের গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে সফল হয়েছেন। জহুরুল ইসলাম বাদলের এসফলতা নিয়ে এলাকার কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পরেছে। তার এ সফলতা দেখে অনেক কৃষক গ্র্যাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেছেন। কৃষক জহুরুল ইসলাম বাদল মোবাইল ফোনে ইউটিউব দেখা ধারনা অনুযায়ী তার নিজস্ব ১৩ কাঠা জমিতে জংলি বা ঘুটি বেগুন গাছের চারা তৈরী করে সেই জংলি বেগুন গাছে গ্র্যাফটিংয়ের মাধ্যমে হাইব্রডি জাতের টমেটোর গাছ সংযোগ করার মাধ্যমেই কৃষক জহুরুল ইসলাম বাদল এখন সফল। বেগুন গাছে টমেটো চাষ করতে গিয়ে ১৩ কাঠা জমিতে সব মিলিয়ে তার খরচ হয়েছে ৩০ হাজার টাকা।
রোপণ এর মাত্র দু’ মাস পর থেকেই গাছে ফল আসতে শুরু করে এমনকি স্বাভাবিক টমেটোর গাছ থেকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরী গাছে অনেক বেশী টমেটো ধরেছে। ইতি মধ্যেই কৃষক জহুরুল ইসলাম বাদল জমি থেকে প্রতিদিন ৬০ বা ৭০ কেজি করে টমেটো উত্তোলন করে বিক্রি করছেন। আগাম তোলা টমেটো বাজারে প্রতি কেজি প্রথম দিকে ১১০ টাকা করে বিক্রি করছেন এবং এখনও কিছুটা দর কমলেও তুলনা মূলক ভালো মূল্য পাচ্ছেন তিনি। ইতি মধ্যেই তিনি সেই হিসাবে মত বিগত দু’মাসে প্রায় ৪ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করেছেন। এগাছগুলো থেকে আরো এক মাস তিনি টমেটো বিক্রি করবেন বলে প্রত্যাশা করছেন। উৎপাদনের হার থাকবে একই রকম। খরচ বাদ দিয়ে নীট মুনাফা আসবে ৪ লাখ টাকার উপর বলেই তার আশা। নতুন প্রক্রিয়ায় টমেটো চাষের সফলতা দেখে এলাকার অনেক কৃষক-ই এখন এ পদ্ধদিতে টমেটো চাষ করতে অগ্রহী হয়ে উঠেছেন। জহুরুল ইসলাম বাদলের সহায়তায় তারা চাষ করতে চান।
নওগাঁর রানীনগর উপজেলার কৃষি অফিসার মোঃ শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, সময়ের প্রয়োজনে কৃষকদের নতুন নতুন অধিক উৎপাদনশীল ফসল চাষে আগ্রহী করে তুলতে কৃষি বিভাগ কাজ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় চাষী জহুরুল ইসলাম বাদল সহ অনেকেই গ্র্যাফটিং পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করে সাফল্য অর্জন করেছেন। এ ব্যপারে কৃষি বিভাগ সর্বাত্মক পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান অব্যাহত রাখবে বলে জানান কৃষি তিনি।