ঢাকাশনিবার , ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

মেহেরপুর থেকে হারিয়ে যাচ্ছে অতীতের সেই টিনের ঘর

Siam Hossen
ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৩ ৯:৩২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!
   
                       

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
সীমান্তবর্তী মেহেরপুর জেলার গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর অতীতের নীড় ছিলো টিনের ঘর। দুই যুগ পূর্বেও জেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামে মানুষের নজর কাড়তো টিনের ছাউনির ঘর। বৃষ্টির পানি থেকে পরিত্রাণের পাশাপাশি বৃষ্টির রিমঝিম শব্দে বসবাস উপযোগী মাটির কিংবা ইটের তৈরি এবং টিনের ছাউনির এসব ঘর এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। আধুনিকতার ছোঁয়া আর কালের আবর্তে এবং অর্থনৈতিক ভাবে সচ্ছল হওয়ায় মেহেরপুর জেলার সদর, গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে অতীতের সেই টিনের ছাউনির ঘর বিলুপ্তির পথে বললেই চলে। অতীতে মাটি কিংবা ইটের গড়া টিনের ছাউনির ঘর দরিদ্র মানুষের পাশাপাশি অনেক বিত্তবানরাও তৈরি করে থাকতেন।
প্রাচীনকাল থেকেই ইটের শুরকি কিংবা মাটির তৈরি ঘরের প্রচলন ছিল এবং ১০-১২ ফুট উচু দেয়ালে কাঠ বা বাঁশের সিলিং তৈরি করে তার ওপর খড় অথবা টিনের ছাউনি দেওয়া হতো। অনেক সময় দোতলা পর্যন্তও করা হতো এ মাটি দিয়েই। এসব মাটির ঘর তৈরি করতে কারিগরদের এক মাসের অধিক সময় লাগতো বলে জানা যায়। গৃহিনীরা মাটির দেয়ালে বিভিন্ন রকমের আল্পনা একে তাদের নিজ বসত ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে তুলতেন। এক সময় জেলার বিভিন্ন এলাকার অনেক পরিবার টিনের ঘরে বাস করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করতো। তবে ঝড়ের সময় টিন উড়ে ঘরের ক্ষতি হয় বেশি এটাও টিনের ঘর কমে যাওয়ার একটি কারণ। তাছাড়া টিন ফুটো হয়ে বর্ষাকালে বিছানা, আসবাবপত্রসহ ঘরের ফ্লোর ভিজে তা দুঃখের আগুনেও ভাসতো। তবে এখনও কিছু কিছু গ্রামে দেখা মেলে সেই টিনের ছাউনির ঘর।
সরেজমিনে জেলার আকুবপুর, সিন্দুরকৌটা, কোদাইলকাটি, চর গোয়ালগ্রামসহ বেশ কিছু গ্রামে চোখে মেলে এসব টিনের বাড়ি। রাস্তার দু’পাশের টিনের ছাউনির ঘরগুলো মনে করিয়ে দেয় সেই পুরনো দিনের কথা। তবে অধিকাংশ গ্রামেই পুরনো টিনের ছাউনির ঘর ভেঙে নির্মাণ করা হচ্ছে দালান-কোঠা তথা অট্রালিকার কাছে হার মানছে সেই চিরচেনা টিনের ছাউনির ঘর।
আকুবপুর গ্রামের মামুন বলেন, খড়ের ছাউনি প্রতি বছর মেরামতের ঝামেলা এড়াতে টিনের ছাউনির ঘর তৈরি করতো আগের যুগে। এখনও বেশ কিছু টিনের ঘর আমাদের এলাকায় রয়েছে। তবে অনেকেই পাকা দালান তৈরির কাজে লেগেছেন। এলাকায় লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া।
কোদাইলকাটি গ্রামের আলমগীর হোসেন জানান, স্বল্প খরচ হলেও যুগের পরিবর্তনে ও আর্থিক সচ্ছলতা আসায় অধিকাংশ মানুষ টিনের ঘর ভেঙ্গে অধিক নিরাপত্তা ও অনেক লোকের বসবাসের জন্য বহুতল বিশিষ্ট ইটের ঘর/পাকা দালান তৈরী করছেন।

মাজিদ আল মামুন
মেহেরপুর প্রতিনিধি
০১৯১৫৩৫১৪৯৮