রাণীশংকৈলে স্ট্রবেরি চাষ, চমক চাষি ইসরাফিলের।

রাণীশংকৈলে স্ট্রবেরি চাষ, চমক চাষি ইসরাফিলের।

মোঃ শরিফুল ইসলাম
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি :

প্রমমবারের মতো ৫০ শতক জমিতে দেড় লাখ টাকা খরচে স্ট্রবেরি চাষ করে ৭ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে ব্যপক স্বাবলম্বী ও চমক দেখিয়ে আলোচিত হয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার রাতোর ইউনিয়নের রাঘবপুর গ্রামের

নজরুল ইসলামের ছেলে ইসরাফিল ইসলাম।স্ট্রবেরি চাষ করে ভাগ্যবদলের স্বপ্নকে সত্যে পরিনত করেছেন এই কৃষক।

অল্প পুঁজি ও স্বল্প শ্রমে অধিক ফলন, বাজার চাহিদা ও দাম ভালো হওয়ায় প্রথমবারেই স্ট্রবেরি চাষে তিন গুণ লাভে ভাগ্য বদলিয়েছে ইসরাফিল। সরেজমিনে স্ট্রবেরি ক্ষেতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির পাশে স্ট্রবেরি ক্ষেতে পরিচর্যা ও বিক্রির

জন্য স্ট্রবেরি তুলছেন কৃষক ইসরাফিল। ওই এলাকায় নতুন এই ফসলের আবাদ দেখতে চাষাবাদে আগ্রহী কৃষক ও স্থানীয়রা প্রতিদিন ভিড় করছেন তার ক্ষেতে। তার প্রতিবেশী অতুল রায় জানান,দূরদূরান্ত থেকে প্রতিদিনই অনেকে স্ট্রবেরি

ক্ষেত দেখতে আসেন। তার এই উদ্যোগ দেখে অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করছেন স্ট্রবেরি চাষে।

আরেক প্রতিবেশী জয়নাল আবেদীন বলেন, স্ট্রবেরি দামি ফল। লাভ দেখে আগামীতে আমারও ২০ শতাংশ জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করার ইচ্ছে আছে। ইসরাফিলের স্ট্রবেরি ক্ষেত দেখতে আসা আব্দুল মোমিন জানান, এই ফলের নাম শুনেছি,

দেখিনি। স্বচক্ষে দেখলাম, খেলাম। খেতে বেশ সুস্বাদু। স্ট্রবেরি চাষি ইসরাফিল বলেন,পরীক্ষামূলক ভাবে উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চারা এনে ৫০ শতক জমিতে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন তিনি। তার এই

জমিতে প্রায় ৮ হাজার উন্নত জাতের স্ট্রবেরি গাছ রয়েছে। এতে বীজ-পরিচর্যাসহ সবমিলিয়ে তাঁর খরচ হয়েছে প্রায় দেড় লাখ টাকা। প্রথম দিকে প্রতি কেজি দুই হাজার টাকা দরে ২০০ কেজি স্ট্রবেরি তুলে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করছেন।

বর্তমানে বাজার মূল্য অনুযায়ী প্রতি কেজি ভালো মানের স্ট্রবেরির পাইকারী দাম প্রায় ৫০০-৭০০ টাকা। এখনো ক্ষেতে আরো প্রায় ১৫ মন, মানে ৬০০ কেজির মতো স্ট্রবেরি রয়েছে। এক মাসের মধ্যে এটাও প্রায় ৩ থেকে সাড়ে ৩ লাখ

টাকায় বিক্রি করতে পারবে। সব মিলিয়ে ৭ থেকে সাড়ে ৭ লাখ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি হবে বলে আশা করছেন ইসরাফিল। বিভিন্ন জেলার পাইকাররা এসে তার ক্ষেত থেকে স্ট্রবেরি নিয়ে যাচ্ছেন। সর্বসাকুল্যে ৫০ শতক জমিতে ৪০ থেকে ৫০

মন স্ট্রবেরি উৎপাদন সম্ভব বলে তিনি জানান। অল্প পুঁজি ও শ্রমে অধিক লাভ হওয়ায় আগামীতে বাণিজ্যিকভাবে বড় পরিসরে স্ট্রবেরি চাষের কথা ভাবছেন বলে জানান।তিনি আরও জানান, অক্টোবর মাসের প্রথম থেকে দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত

স্ট্রবেরির চারা রোপণ করা যায়। আগাছা নিড়ানো ও কীটনাশক স্প্রে করে পরিচর্যা ও নিবিড় যত্নে ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে থোকায় থোকায় ফল আসা শুরু হয়। ডিসেম্বরের শেষ ভাগ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ফল আহরণ ও বিক্রির উপযোগী হয়ে

ওঠে।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সহীদুল ইসলাম জানান, এ উপজেলা স্ট্রবেরি চাষে বেশ উপযোগী। কিন্তু স্ট্রবেরি একটি সংবেদনশীল ফল ও অল্প সময়ের জন্য তাজা থাকে। তাই বাণিজ্যিকভাবে স্ট্রবেরি চাষ ও বাজারজাতকরণ

বড় চ্যালেঞ্জ। চাষি ইসরাফিল সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সফল হয়েছেন। বাজারে এর অনেক দাম ও ব্যাপক চাহিদাও রয়েছে। কৃষি বিভাগ তাকে সহায়তা দিয়েছে। তার সফলতা দেখে অন্যান্য কৃষকরাও স্ট্রবেরি চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *