ঢাকারবিবার , ১৩ আগস্ট ২০২৩

ঠাকুরগাঁও ১ আসনে রমেশ চন্দ্রের সঙ্গে মনোনয়ন দৌড়ে ৩ নেতা

মাসুদ রানা
আগস্ট ১৩, ২০২৩ ১০:৪০ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!
   
                       

বিশেষ প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁও

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ২২ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ১ আসন। আর আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বতর্মান এমপি রমেশ চন্দ্রের সঙ্গে মনোনয়ন দৌড়ে ৩ নেতা (বাম থেকে) রমেশ চন্দ্র সেন, অরুণাংশু দত্ত টিটো, মুঃ সাদেক কুরাইশি, সাহেদুল ইসলাম সাহেদ। ঠাকুরগাঁও ১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন। এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে তিনি পাঁচ বার নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। এই সময়কালে দলীয় মনোনয়ন পেতে তেমন বেগ পেতে হয়নি তাকে। তবে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রমেশ চন্দ্র সেনের বিপরীতে স্থানীয় তিন নেতা প্রার্থী হওয়ায় দৌঁড়ে রয়েছেন। রমেশ চন্দ্র সেন ছাড়াও দলের মনোনয়ন পেতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অরুণাংশু দত্ত টিটো, ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সাদেক কুরাইশী, সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম খাদেমুল ইসলামের ছেলে ও বাংলাদেশের হয়ে দুবাইয়ে মিনিস্টার এন্ড ডেপুটি কনসাল জেনারেল সাহেদুল ইসলাম সাহেদ। আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা রমেশ চন্দ্র সেন। তিনি ১৯৯৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি উপনির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। উপনির্বাচন হয় ওই আসনের সংসদ সদস্য খাদেমুল ইসলাম ১৭ ডিসেম্বর ১৯৯৬ সালে মারা যাওয়ার কারণে। পরের বার ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির মির্জা ফখরুল আলমগীরের কাছে তিনি হেরে যান। এরপর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর দ্বিতীয় বার, ২০১৪ সালে তৃতীয় বার এবং সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর চতুর্থবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তবে বয়স ও কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ড বিবেচনায় রমেশ চন্দ্র সেনের এবার মনোনয়ন পাওয়া কঠিন হবে বলে অনেকে মনে করছেন। এর সুযোগে দলীয় মনোনয়ন নিতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন জেলার তিন হেভিওয়েট নেতা। তাই প্রথম বারের মতো এই বার দলীয় মনোনয়ন পেতে বেগ পেতে হবে রমেশ চন্দ্র সেনকে। ইতোমধ্যে নিজেকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অরুণাংশু দত্ত টিটো। এলাকায় তিনি বেশ প্রভাবশালী হিসেবে বিবেচিত। ঠাকুরগাঁও ১ আসনে প্রায় ৩১ শতাংশ ভোটার হিন্দু ধর্মাবলম্বী হওয়ায় নৌকার মনোনয়ন দৌড়ে তিনি এগিয়ে থাকবেন বলেও ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া দীর্ঘ সময় তৃণমূলে কাজ করে নিজের অবস্থান শক্ত করেছেন। উপজেলায় কর্মীবান্ধব নেতা হিসেবে তার সুনাম রয়েছে।দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন পাবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

এছাড়াও ঠাকুরগাঁও ১ আসনের পরবর্তী মুখ হিসেবে যে রাজনীতিবীদের নাম সবচাইতে বেশি আলোচনায় রয়েছে, তিনি তরুণ নেতা সাহেদুল ইসলাম সাহেদ। সাহেদ সাবেক সংসদ সদস্য মরহুম খাদেমুল ইসলামের ছেলে ও বাংলাদেশের হয়ে দুবাইয়ে মিনিস্টার এন্ড ডেপুটি কনসাল জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গুরুত্বপূর্ণ এই অবস্থানে যাওয়ার পর থেকে সাহেদের প্রতি সভানেত্রী শেখ হাসিনার সুনজর আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
সাহেদুল ইসলাম সাহেদ বলেন, এলাকার মানুষের জন্য নিজের অর্থায়নে বিভিন্ন সামাজিক কাজ করে যাচ্ছি। মাঠপর্যায়ে আমার প্রস্তুতি খুব ভালো। মনোনয়নের বিষয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী।

অপরদিকে, আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের কাণ্ডারি হিসেবে পরিচিত ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুঃ সাদেক কুরাইশী। সফলতার সঙ্গে দীর্ঘ দিন ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৯ সালে তিনি জেলা সভাপতি নির্বাচিত হন। শান্ত ও ভদ্র স্বভাবে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন এই নেতা। দীর্ঘ সময়ে দলের সঙ্গে যুক্ত থেকে দলের হাল ধরার পুরস্কার স্বরূপ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দুই বার ঠাকুরগাঁও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। তিনিও প্রথমবারের মতো সরাসরি নিজের প্রার্থী হবার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন।

ঠাকুরগাও ১ আসনে ইতোমধ্যে জাতীয় নির্বাচনে বিরোধী পক্ষের সঙ্গে লড়াইয়ের আগে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ লড়াই নিয়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। গ্রামাঞ্চলের চায়ের দোকান থেকে দলীয় কার্যালয়, সর্বত্র আলোচনার প্রধান অনুষঙ্গ, কে হচ্ছে ঠাকুরগাঁও ১ এ নৌকার মাঝি। নৌকা মনোনয়নে আলোচিত চার নেতার যেই মনোনয়ন পাবেন, তাকেই স্থানীয় নেতাকর্মীরা সাদরে গ্রহণ করবে বলে মনে করেন ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বাবলুর রহমান।