নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
শিক্ষার মূলভিত্তি হচ্ছে প্রাথমিক বিদ্যালয়। যদিও শিশুরা অ আ, ১ ২, ক খ পরিবারেই শিখে, সেটার মূল ভিত্তি মজবুত করা হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। নতুন বছরে সরকার প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে সময়সূচির পরিবর্তন করেছে। চালু করা হয়েছে দুই শিফট।প্রাথমিকে ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে এক শিফটের কার্যক্রম সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত ও দুই শিফটের কার্যক্রম সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে ব্যতিক্রম নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা ইউনিয়নের হলদীবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এখানে মানা হয়না সরকারি কোন নিয়ম কানুন। শিক্ষকরা নিজেদের মতো করে আসেন বিদ্যালয়ে, ছুটিও দেন ইচ্ছেমতো।
নতুন সময়সূচি অনুযায়ী সকাল ৯টায় বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরুর নিয়ম থাকলেও এখানে শিক্ষকরা আসতে আসতে বাজে ১০-১১টা। বিদ্যালয়ে এসে কোনো রকমে দু-একটি ক্লাস নেন। দুপুর দেড়টা থেকে দুই টা বাজতেই বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে চার শিক্ষক বাড়ি যান তারা।এতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ হারাচ্ছে শিশুরা। সেই সেঙ্গ দিন দিন বেসরকারি বিদ্যালয়ের দিকে ঝুঁকছে তারা।সরেজমিনে দেখা যায়, বুধবার (১০ জানুয়ারি) দুপুর ১টা ৪৫ মিনিটে হলদীবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষক নেই। অফিস কক্ষ সহ প্রতিটি শ্রেণি কক্ষ তালাবদ্ধ। তবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন আছে। এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েক জন স্থানীয় বলেন, ১ জানুয়ারি নতুন বই দেয়া হলেও ক্লাস নেয়ার বিষয়ে শিক্ষকদের আগ্রহ নেই। নিজেদের মনমতো বিদ্যালয়ে আসেন আবার ইচ্ছামতো চলে যান। এতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হয়। বছরের শুরুতেই নতুন বই পেয়ে লেখাপড়ায় আগ্রহী হলেও শিক্ষকদের অবহেলায় মনোযোগ হারাচ্ছে শিশুরা।অপর এক জন স্থানীয় বলেন, বছরের প্রথম দিন নতুন বই দিচ্ছে সরকার, যেন শিশুদের পড়ালেখায় কোনো ব্যাঘাত না ঘটে। অথচ শিক্ষকরা ঠিকমতো ক্লাস নেন না। তারা যদি গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার্থীদের পড়াতো তাহলে ফলাফল আরও ভালো হতো। তারা বিদ্যালয় আসে ১০-১১টা আবার চলে যান দুপুর ২টার মধ্যে। তাহলে কি ভাবে ভালো পড়াশোনা হবে।
সময়ের আগেই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ছুটি দেয়ার কারণ জানতে চাইলে হলদীবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এনামূল হকের মুঠোফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি। প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ের আগে বিদ্যালয় ছুটি দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জলঢাকা উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আরমানা জাহান সিদ্দিকী বলেন, প্রধান শিক্ষক কে অফিসিয়াল কাজে অফিসে আসতে বলা হয়েছে। তবে দেড়টায় স্কুল ছুটির বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।