নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের নলডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান মনির ও তার অনুসারিদের বিরুদ্ধে ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে গরীব ও দুস্থ্যদের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরনের সময় সুবিধাভোগীদের হাতুরি ও বাটাম দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দুপুর ১ টার সময় পৌরসভা চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এসময় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন লাঞ্চিত হওয়া সুবিধাভোগিরা । এসময় স্থানীয়রা বাধা দিতে গেলে তাদের ওপরও চড়াও হয় মেয়র সহ তার লোকজন। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বলে দাবি করেছেন পৌর মেয়র মনিরুজ্জামান।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে নলডাঙ্গা পৌরসভার ভিতরে আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে ৪নং ও ৫নং ওর্য়াডের গরীব ও দুস্থ্যদের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরন চলছিল। এসময় লাইনে দাঁড়িয়ে চাল গ্রহণ করছিলেন প্রায় সাড়ে ৪০০ মানুষ। এ অবস্থায় দুপুর একটার দিকে ৪নং ওয়ার্ডের
সোনাপাতিল মহল্লার বাসিন্দা শাহিন, জেলার, রকি,নয়ন, মিঠুন, রানা, নলডাঙ্গার রাজিব, আশিক, পুর্বসোনাপাতিল মহল্লার আলমঙ্গীর, মনিরুল, হলুদঘর মহল্লার স্বাধীন সহ অন্তত ২০ জন লাইনে দাঁড়ানো সুবিধাভোগীকে হাতুরি ও কাঠের বাটাম দিয়ে বেদম মারপিট করে পৌরসভা থেকে বের করে দেন।
মেয়র মনিরুজ্জামানসহ তার লোকজন। এঅবস্থায় লোকজন বাধা দিতে গেলে তাদের ওপরও চড়াও হন তারা। এসময় ক্ষুরের আঘাতে
মনিরুল ইসলামসহ চারজন মারাত্মক আহত হন। আহতদের ৪ জনকে নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যদের স্থানীয় ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পৌর মেয়র মনির নলডাঙ্গা পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক।
নলডাঙ্গা পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ ও ৪নং ওর্য়াড কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম পিয়াস এই তথ্য নিশ্চিত করে দৈনিক প্রথম বাংলাদেশ কে জানান।
পৌরসভার নানাবিধ অনিয়মের প্রতিবাদ করাসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে মেয়র মনিরুজ্জামান মনিরের সাথে তার বিরোধ চলছে। ওই বিরোধের জেরে বৃহস্পতিবার তার ওর্য়াডের সুবিধাভোগী ব্যক্তিদের ওপর মেয়র মনির নিজেসহ তার সহযোগি রহিদুল, নিশান, মিলন, রুবেল. সাগর ও আরো অনেকে মিলে হামলা চালায় এবং হাতুরি, বাটাম দিয়ে বেদম মারপিট করে পৌরসভা থেকে বের করে দেন। কারন ওই সুবিধাভোগীরা তার অনুসারী হওয়ায় এমনটি করা হয়েছে।
ঘটনার সময় তিনি নিজেও পৌর কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন । এসময় তিনি বাধা দিতে গেলে তার দিকে তেড়ে আসেন মেয়র সহ তার সমর্থকরা। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ধারালো ক্ষুর দিয়ে আঘাত করে ৪ জনকে জখম করা হয়েছে। তাদের নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এব্যাপারে তারা আইনের আশ্রয় নিবেন বলে জানান তিনি।
নলডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান মনির জানান, চাল বিতরনের সময় কয়েকজন উশৃংখল যুবক বিশৃংখলার সৃষ্টি করছিল। তাদের চলে যেতে বললে খারাপ আচরন করে। এসময় উভয়ের মধ্যে কথাকাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। মারপিট বা ক্ষুরে আঘারে ঘটনা সঠিক নয়। তিনি বলেন,তারা চাল নিয়ে ঘরের মধ্যে ভিড় করে দাঁড়িয়ে ছিল। অন্যদের সুবিধা করে দেয়ার জন্য তাদের চলে যেতে বলা হয়। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়। তার সাথে শরিফুল ইসলাম পিয়াসের কোন দ্বন্দ্ব নাই বলে দাবী করেন।
নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম জানান, ভিজিএফ চাল বিতরনের সময় পৌরসভার ভিতরে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারপিটের ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছেন। তবে এখনও কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।