ঢাকামঙ্গলবার , ২৩ জানুয়ারি ২০২৪

নাটোরের নলডাঙ্গায় এতিমখানা ও এবতেদায়ী মাদরাসায় সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ৪ যুবক আটক

নলডাঙ্গা :(নাটোর) প্রতিনিধি
জানুয়ারি ২৩, ২০২৪ ১০:২২ অপরাহ্ণ
Link Copied!
   
                       

 

মো: বিপ্লব তালুকদার (নাটোর)

নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় একটি হাফেজিয়া এবতেদায়ী মাদরাসা ও এতিমখানায় সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ৪ যুবককে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে দিয়েছেন এলাকাবাসী। এসময় তারা ওই মাদরাসা শিক্ষকদের কাছে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অনিয়মের অভিযোগ এনে ১ লাখ টাকা দাবী করেন।

মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারী) দুপুরের দিকে উপজেলার গৌরিপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিকেলে ওই ৪ যুবককে আটক দেখিয়ে মামলা রুজু করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।

আটকরা হলেন, ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট উপজেলার আকনপাড়া গ্রামের ইমান আলীর ছেলে মোঃ লিমন হোসেন (২৭), গাজিপুর জেলার মোঘরখাল এলাকার আবু সাইদ সরকারের ছেলে মোঃ জয় সরকার (২৮), বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার হামরাজ গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে মোঃ ইউনুস আলী জয় (২৭) ও শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার ভারতকান্দি গ্রামের মৃত শাহিন মিয়ার ছেলে মোঃ সিহাব মিয়া (২৪)।

নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মনোয়ারুজ্জামান এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, আটককৃতরা সকলেই নিজেদের সাংবাদিক বলে দাবী করেন। তারা দৈনিক আজকের বসুন্ধরা, এই বাংলা, চ্যানেল২১ ও বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি, ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি ও ষ্টাফরির্পোটারের পরিচয় দেন এবং তাদের কাছে সংশ্লিষ্ট পত্রিকার পরিচয়পত্র ও লগো দিয়ে ষ্টিকার লাগানো ৪টি মোবাইল ফোন পাওয়া যায়। তবে তারা প্রকৃত সাংবাদিক কিনা তা এখনও নিশ্চিত নয়।

ওসি বলেন, আটককৃতরা একটি প্রাইভেট কার নিয়ে আজ দুপুরের দিকে নলডাঙ্গা উপজেলার গৌরিপুর হাফেজিয়া এবতেদায়ী মাদরাসা ও এতিমখানায় যান। সেখানে কর্মরত প্রধান শিক্ষকসহ মাদরাসা কর্তৃপক্ষকের সন্ধান করেন তারা। এসময় তাদের দেখে প্রধান শিক্ষকসহ মাদরাসা কর্তৃপক্ষকের লোকজন এগিয়ে যান।

এসময় তারা প্রতিষ্ঠানে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন। এক পর্যায়ে তারা ১ লাখ টাকা দাবী করেন। এসময় তাদের কথা বার্তা ও চলাফেরায় সন্দেহজনক হলে স্থানীয় লোকজন প্রথমে আটক করেন। পরে গণধোলাই দিয়ে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং তারা নিজেদের সাংবাদিক বলে দাবী করেন। ইতোপুর্বেও একবার ওই প্রতিষ্ঠান থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা একই কায়দায় নিয়ে গেছেন তারা। আর মাঝে মধ্যে ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষককে ফোন দিয়ে টাকা দাবী করতেন তারা, না দিলে প্রতিষ্ঠানের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করবে বলেও হুমকি-ধামকি দেয়। এতে পাত্তা না দেয়ায় তারা ফের আজ দুপুরে ওই প্রতিষ্ঠানে এসে ১ লাখ টাকা দাবী করেন।

এঘটনায় গৌরিপুর হাফেজিয়া এবতেদায়ী মাদরাসা ও এতিমখানায় কর্মরত প্রধান শিক্ষক রোকনুজ্জামান বাদি হয়ে সাংবাদিক পরিচয়দানকারী তিন যুবক ও গাড়ি চালককে আসামী করে চাঁদাবাজির অভিযোগে নলডাঙ্গা থানায় মামলা রুজু করেছেন। এব্যাপারে তদন্ত কওে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া তারা আদৌ সাংবাদিক কিনা নাকি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিক পরিচয়ে আরো কোন অপরাধ কর্মকান্ড করে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।

এ ব্যাপারে দৈনিক আজকের বসুন্ধরা ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোঃ সোহেল রানা জানান, মোঃ ইউনুস আলী জয় গাজিপুর জেলার গাছা প্রতিনিধি ও মোঃ জয় সরকার গাজিপুর জেলায় ভ্রাম্যমান প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করতো। তারা বিভিন্ন অপকর্ম ও চাঁদাবাজির সাথে লিপ্ত থাকার কারনে অনেক আগেই তাদের বাদ দেয়া হয়েছে। এরআগে গাইবান্ধা জেলায় একই ঘটনা ঘটিয়েছিল। তবে তারা এখন আজকের বসুন্ধরা পত্রিকার সাথে জড়িত নেই। তিনি বলেন, তাদের দায়ভার আজকের বসুন্ধরা পত্রিকা নিবে না। বরং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানাচ্ছি।

এব্যাপারে দৈনিক বাংলাদেশ সমাচার পত্রিকার সম্পাদক ড: খান আসাদুজ্জামান এর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি।