মোঃ মেহেদী হাসান

ভাঙ্গুড়া, পাবনা

ভাঙ্গুড়া উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে এখন হলুদের সমারোহ। সরিষা ফুলের রূপ ও গন্ধে মাতোয়ারা চারিদিক। প্রতি বছরের মতো এবারও সরিষাখেত থেকে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৌ-খামারিরা।

উপজেলার বিভিন্ন মাঠে সরজমিনে দেখা গেছে, সরিষাখেতের পাশে ফাঁকা জমিতে মৌমাছি শত শত বাক্সে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। মৌমাছির দল ভোঁ ভোঁ শব্দ করে সরিষা ফুলে ঘুরে ঘুরে মধু আহরণ করছে।

মুখভর্তি মধু সংগ্রহ করে ফিরে যাচ্ছে মৌ-খামারিদের মৌবাক্সে। সেখানে তাদের সংগৃহীত মধু জমা করে আবার ফিরে যাচ্ছে সরিষার জমিতে। এভাবে দিনব্যাপী মৌমাছিরা যেমন মধু সংগ্রহ করছে। তেমনি ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়াতে গিয়ে ঐ জমির সরিষা ফুলে পরাগায়ণ করতে সহায়তা করছে মৌমাছির দল।

 

মৌ-খামারিরা জানান, একটি বাক্সে ৮-১০টি মোম দিয়ে তৈরি মৌচাকের ফ্রেম রাখা হয়। আর মৌবাক্সের ভেতরে রাখা হয় রানি মৌমাছি। ফুল থেকে মৌমাছিরা মধু এনে বাক্সের ভেতরের চাকে জমা করে। রানি মৌমাছির কারণে ঐ বাক্সে মৌমাছিরা আসতে থাকে। বাক্সের মধ্যখানে নিচের দিকে ছিদ্র করে রাখা হয়। সে পথ দিয়ে মৌমাছিরা আসা-যাওয়া করতে থাকে। বাক্সের ভেতরের চাকগুলো মধুতে পরিপূর্ণ হতে সময় লাগে ১০ থেকে ১২ দিন। এরপর মধুচাষিরা বাক্স খুলে চাকের ফ্রেম থেকে মেশিনের সাহাঘ্যে মধু সংগ্রহ করেন।

 

পাবনার বড়পুকুরিয়খ গ্রাম থেকে আসা মৌ-খামারি গোলাম ও রমজান হোসেন বলেন, ২৮ ডিসেম্বর ভাঙ্গুড়া সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহের জন্য এসেছি। আশাকরি ভালো পরিমাণ মধু সংগ্রহ করতে পারব।

 

সরিষা ফুলের জন্য পাবনা ও সিরাজগঞ্জ, কালোজিরা ফুলের জন্য শরীয়তপুর, লিচু ফুলের জন্য দিনাজপুর ও নাটোর, কুমড়া ফুলের জন্য ঠাকুরগাঁও এবং তিলের ফুলের সময় নিজ এলাকাতেই মধু সংগ্রহ করি। এছাড়া চার-পাঁচ মাস মৌমাছিদের চিনি খাইয়ে রাখতে হয়। বছর শেষে খরচ বাদে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা আয় হয়।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন জাহান জানান, যেসব সরিষাখেতে মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে সেই জমিগুলোতে অন্য জমির তুলনায় ১৫-২০ ভাগ ফলন বেশি হবে। কারণ মৌমাছি ফুলে পরাগায়ণ করতে সহায়তা করে। এছাড়া এলাকাবাসী অল্প মূল্যে খাঁটি মধু পাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *