মাসুম বিল্লাহ, শেরপুর বগুড়াঃ
বগুড়ার শেরপুরে পৈত্রিক সম্পত্তি রক্ষার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে চার গ্রামবাসী। ৪ জানুয়ারি বুধবার বেলা সাড়ে বারোটায় উপজেলা ভবানীপুর ইউনিয়নের আম্বইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে এই সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে এই ইউনিয়নের আম্বইল, গোড়তা, বালেন্দা ও ভাদড়া গ্রামের অন্তত তিনশ নারী-পুরুষ অংশ নেয়। সাংবাদিক সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, স্থানীয় ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী স¤প্রদায় অন্তত পাঁচ বছর ধরে এই চার গ্রামের অন্তত অর্ধশতাধিক পরিবারের প্রায় ১শ বিঘা তিন ফসলী জমি জোরপূর্বক দখল করেছে। জমি উদ্ধারে ভুক্তভোগী পরিবাররা জমির পাশে গেলে ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের লোকজন তাদেরকে ধাওয়া করে জমির থেকে তুলে দিচ্ছে। এই জমি রক্ষার জন্য অর্ধশতাধিক জমির মালিকেরা ভূমি রক্ষা কমিটি গঠন করে।
এসময় আম্বইল গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সোলাইমান আলী বলেন, এই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবার তার ১৫ বিঘা জমি জোরপূর্বক দখল করেছে। ওই গোষ্ঠীদের হুমকীতে তিনি এখন তার জমিতেও ফিরতে পারছেন না। একের পর এক তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি আদিবাসীরা দখল করে নেওয়ায় তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। একই গ্রামের আরেক কৃষক আব্দুস সালাম বলেন, প্রায় দেড় মাস আগে তিনি পাঁচ বিঘা জমিতে বোরো ধানের বীজ বপন করেছিলেন। এই জমিটিও কিছুদিন আগে স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবারগুলো দখল করে নিয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে আম্বইল গ্রামের গ্রামের জসিম উদ্দিন, বালেন্দা গ্রামের সাহেব আলীসহ উপস্থিত ওই চার গ্রামের ১৫ জন কৃষক বলেন, তারা জমি উদ্ধারের জন্য আদালতে ১৩টি মামলা দায়ের করেছেন। তারপরও দখলবাজদের এভাবে জমি দখল প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। গত এক মাসে তাদের আরও ১২ বিঘা জমি বেদখল হয়ে গেছে। জমি উদ্ধারের জন্য এই চার গ্রামবাসী এক সপ্তাহ আগে বগুড়া জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, শেরপুর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা (ইউএনও) ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রতিকার চেয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন। কিন্তু আজও তারা কোন প্রতিকার পাননি।
এ প্রসঙ্গ নিয়ে ভবানীপুর ইউনিয়নের গোড়তা গ্রামের ক্ষুদ্রনৃগোষ্ঠী কমল সিং বলেন, তাদের ইউনিয়নের আম্বইল, গোড়তা, বালেন্দা ও ভাদড়া গ্রামের অন্তত ১ হাজার আদিবাসী পরিবার রয়েছে। যে জমি নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলা হয়েছে সেগুলো তাদের দখলীয় জমি। জমিগুলো সরকারি খাস সম্পত্তি হলেও পূর্বপুরুষ থেকে তাদের দখলে রয়েছে। জাতীয় আদিবাসী পরিষদের বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি সন্তোষ সিং দাবি করেন, তৎকালে সিএস খতিয়ান প্রস্তুতের সময় যে জমিগুলো নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে তা তাদের সম্পত্তি হিসেবে উল্লেখ রয়েছে। স্থানীয় কিছু কৃষক জমির ভুয়া কাগজপত্র সৃষ্টি করে মালিকানা দাবি করছে। আমরা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি দখল করি নাই। নিজেদের সম্পত্তি দখলে নিয়েছি মাত্র। এ প্রসঙ্গ নিয়ে শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সানজিদা সুলতানা বলেন, এই বিষয় নিয়ে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *