মশিয়ার রহমান, নীলফামারীঃ
নীলফামারীর ডোমার উপজেলার ৯নং সোনারায় ইউনিয়নে অবস্থিত বিএডিসি উৎপাদন খামার। উক্ত খামারে আলু উৎপাদনের পাশাপাশি এবছর ২শত ৬০ একর জমিতে আউশ ধান রোপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন উক্ত খামারে নিয়োজিত কৃষাণ কৃষাণীসহ অত্র দপ্তরের কর্মকর্তা এবং কর্মচারীবৃন্দ। খামারের পুরো এলাকা ঘুরে দেখা যায় আউশ ধান রোপনের কাজ চলছে পুরোদমে,সকাল থেকে শুরু করে বীজ বপন এবং মেশিন দিয়ে চারা রোপণে ব্যস্ত খামারের কৃষাণ কৃষাণীরা।
শ্রমিকরা জানায় আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই কাজ করতে পারছি। এবং বর্তমানে এই খামারে ৩ ফসলি উৎপাদন হচ্ছে।
বিএডিসি খামারে কর্মরত শ্রমিক সর্দার নাসিরুল হক বলেন, বর্তমানে বীজ তৈরি এবং রোয়া লাগানোর কাজে ১টি ব্লকে ১শত ২০ জন পুরুষ এবং মহিলা শ্রমিক কাজ করছে। বীজ বপনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন প্রথমে মাটিতে ব্লিচিং পাউডার দিয়ে শোধন করা হয়, তারপর সেই মাটির সাথে রাসায়নিক সার ইউরিয়া, টিএসপি,ড্যাব, জীব,জিংক এবং ম্যাগনেশিয়ামের পাশাপাশি বীজ রক্ষার স্বার্থে কিটনাশক ব্যবহার করা হয়। ৫ থেকে ৭ দিনের মধ্যে নেটিংয়ের মাধ্যমে মাটিকে তৈরি করা হয় এরপর পানির সাথে প্রভেক্স পাউডার মিশিয়ে ১৬ ঘন্টা ভিজিয়ে রাখা হয় এবং ভিজিয়ে রাখা বীজ পূর্ণরায় ২৪ ঘন্টা জাগ দিয়ে রেখে ট্রেরের মাধ্যমে বপন করা হয় এবং ১৬/১৮ দিনের মধ্যে রোয়া লাগানোর উপযোগী হয়ে উঠে এরপর মেশিনের মাধ্যমে রোয়া লাগানো হয়। বর্তমানে এই খামারে আমার নিয়ন্ত্রণে ৮৫ একর জমি রয়েছে যেটা আমার তদারকিতে কাজ চলছে।
তিনি আরও বলেন,ডোমার বিএডিসি উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক আবু তালেব মিয়ার দিক নির্দেশনায় মানসম্পন্ন বীজআলু উৎপাদন, সংরক্ষণ এবং কৃষক পর্যায়ে বিতরণ জোরদার করণ প্রকল্পের অর্থায়নে ট্রান্সপ্লান্টার মেশিন ব্যবহার করে চলতি উৎপাদন মৌসুমে ২ শত ৫৫ একর জমিতে আউশ ধান বীজ এবং আমন ধান ৮০ একর জমিতে উৎপাদনের জন্য চারা রোপণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে আধুনিক যান্ত্রিক উপায়ে কৃষি যন্ত্রপাতির ব্যবহারের মাধ্যমে রোপনের কাজ চলছে। এবং আমরা আধুনিক যন্ত্রপাতির মাধ্যমে খুব সহজেই কাজ করতে পারছি, এতে কষ্ট যেমন কমেছে তেমনি রোপন কার্যক্রমে সময়ও কম লাগছে।
জানা গেছে বিগত বছরে ২শত ৪০ একর জমিতে আউশ ধান আবাদ করা হয়েছে এবং উৎপাদন হয়েছে ৩শত ৮০ মেঃটন বীজ ধান। এর পাশাপাশি ৩৮ একর জমিতে আমন ধান বীজ (ব্রি-ধান-৭৫) চাষ করা হয়েছিল এতে উৎপাদিত হয়েছে ৫৩ মেঃটন ধানবীজ। ১৫ একর জমিতে ব্রি-ধান-৩৪ চাষ করা হয় এতে উৎপাদিত হয়েছে ১৮ মেঃটন ৩শত কেজি ধানবীজ।এবিষয়ে এলাকার স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক বছরের তুলনায় বর্তমানে বিএডিসি উৎপাদন খামারের অবস্থা অনেক ভালো। এখানে উপ-পরিচালক পদে আবু তালেব মিয়া যোগদানের পর থেকে তিনি খামারের চিত্র বদলে দিয়েছেন। যেখানে এই খামারে বছরে একবার ফসল উৎপাদন হয় সেই জমিতে তিনি বছরে ৩ বার ফসল উৎপাদন করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি অনাবাদি জমিগুলো ফসলের আওতায় এনেছেন।এবিষয়ে বিএডিসি উৎপাদন খামারের উপ-পরিচালক আবু তালেব মিয়া বলেন, বিগত বছর গুলোতে আলুবীজ উৎপাদনের পর জমিগুলো পড়ে থাকতো, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদি না থাকে, সেই লক্ষ্যে জমিকে আউশ চাষাবাদ করার উপযোগী করে তোলা হয়েছে। এর আগে লক্ষমাত্রার চেয়ে অনেক বেশি আলুবীজ উৎপাদন করে খামারের সুনাম অর্জনে সক্ষম হয়েছি। এবার লক্ষমাত্রার চেয়ে ২০ ভাগ ফলন বেশি হবে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেছেন। খামারের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য ১৮ একর জমি বর্ধিত করা হয়েছে এবং প্রতিটি জমিকে ফসলের আওতায় আনার লক্ষ্যে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি এবং সকলের প্রচেষ্টায় খামারের উৎপাদন বৃষ্টি পাচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।